মালচিং প্রযুক্তি

মাটির রস সংরক্ষণে পলি মালচিং প্রযুক্তির ব্যবহার

বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ। আর এই পদ্ধতিটি কে বলে মালচিং। সবজি ও ডাল – শষ্য চাষে পলি-মালচিং প্রযুক্তি বর্তমানে আমাদের দেশের জন্য দারুন লাভজনক। কারনঃ –

(১) এতে আগাছা নাশের জন্য নিড়ানির বড় খরচ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

(২) মাটিতে পানি-সংরক্ষণ হওয়ায় সেচের খরচও ৭০% কম হয়।

(৩) রোগ-পোকার উপদ্রব কম থাকে।

(৪) সূর্য্যালোক মাল্চে প্রতিফলিত হয়ে গাছকে বেশী বাড়-বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এসব কারনে ফলন সাধারন চাষের থেকে ১.৫ থেকে ১.৭ গুন বৃদ্ধি পায়। ভালো পলি-মালচিং-এর জন্য সিলপোলিনের কালো ৩৫ জি.এস.এমের পলি-শীট ব্যবহার করুন।

মাটির রস সংরক্ষণে পলি মালচিং প্রযুক্তি

ক) ফসলের ক্ষেতে আর্দ্রতা সংরক্ষণে মালচিং বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ফসল ক্ষেতের পানি সূর্যের তাপ ও বাতাসে দ্রুত উড়ে যায় না। ফলে জমিতে রসের ঘাটতি হয় না এবং সেচ লাগে অনেক কম। মালচিং ব্যবহার করলে জমিতে প্রায় ১০% থেকে ২৫% আর্দ্রতা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।

খ) মালচিং করার জন্য যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো জৈব ও অজৈব পদার্থ। উপাদানগুলো হলো – ধান বা গমের খড়, কচুরিপানা, গাছের পাতা, শুকনো ঘাস, কম্পোস্ট, ভালোভাবে পচানো রান্নাঘরের আবর্জনা ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

গ) গাছের গোড়া, সবজির বেড এবং ফলবাগানে গাছের গোড়া হতে এক থেকে দু’ইঞ্চি (২.৫০ – ৫.০ সে.মি) দূরে বিভিন্ন ধরনের মালচ ব্যবহার করা যেতে পারে। মালচিংয়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন পদার্থ অবশ্যই ৫ সেন্টিমিটার (২ ইঞ্চি) এর বেশি পুরু করে দেওয়া ঠিক নয়।

ঘ) উল্লেখ্য যে, মালচিং পদার্থের পুরুত্ব বেশি হলে তা গাছপালার অনাকাঙ্খিত মূল গজাতে সহায়তা করবে। এমনকি সঠিক মালচিং প্রয়োগে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণও রোধ করা যায়।

ঙ) শীতকালে মালচিং ব্যবহার করলে মাটিতে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা ধরে রাখা সম্ভব হয় এবং গরমকালে মাটি ঠান্ডা থাকে, এমনকি বেশ কিছু পোকামাকড়ের আক্রমণ রোধ করা যায়।

চ) সবচেয়ে বড় কথা মালচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে পানি লাগে অনেক কম। সেচ খরচ বাঁচে, লাভ হয় বেশি।

ছ) পাহাড়ি এলাকা এমনকি টিলা, পাহাড়ের ঢালে বিশেষ করে লালমাটি এলাকায় স্বল্প খরচে মালচিং প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। ফল গাছ বিশেষ করে লেবু, পেয়ারা, কাঁঠাল, আম, নারিকেল, কলা, কমলা, আনারস, বাতাবি লেবু, পেঁপে, আদা, হলুদ এসব গাছের গোড়ায় মালচিং দিয়ে সম্ভব হলে ১-২ সপ্তাহ পর একবার সেচ দিয়েও বেশি সময় আর্দ্রতা রক্ষা করা সম্ভব।

জ) টমাটো, বেগুন, মরিচ, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরী ইত্যাদির চাষে মাল্চিং বিশেষত পলিমাল্চিং খুবই ফলপ্রদ ও লাভজনক পদ্ধতি।

স্ট্রবেরি গাছ কোন সময় রোপণ করতে হয়?
মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করে সফল কৃষক

মন্তব্য করুন

My Cart
Close উইশলিস্ট
Close Recently Viewed
পণ্য তুলনা করুন (0 পণ্য)
Compare Product
Compare Product
Compare Product
Categories